স্টাফ রিপোর্টার ঃ ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ তারিখে নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে জবাই করে হত্যা, বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার এবং উক্ত স্থানে গৃহিত উন্নয়ন প্রকল্পের নিরাপত্তা ও জানমাল হেফাজতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। “গুজব হুজুগ সন্ত্রাস নয়, উন্নয়ন হোক দেশময়” এ প্রতিপাদ্য বিষয় সামনে রেখে ময়মনসিনংহ জেলা হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৪ মার্চ সোমবার সকাল ১১টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন ময়মনসিংহ জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব। এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় আমির মোঃ এনামুল হক বাপ্পা, বিভাগীয় রাজনৈতিক সম্পাদক মোঃ রহমত উল্লাহ রানা, ময়মনসিংহ জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাচ্চু মিয়া, ময়মনসিংহ পশ্চিম সভাপতি মোঃ মফিজুল ইসলাম, এমদাদুল হক মিলনসহ উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন,হেযবুত তওহীদ একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন। ১৯৯৫ সালে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী জমিদারপন্নী পরিবারের সন্তান এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী এই আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই আন্দোলন ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদ, মাদক, সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, নারী নির্যাতন ইত্যাদি যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে আদর্শিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেছি।এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্যআবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করেছি।আরও রয়েছে মসজিদভিত্তিক মক্তব যেখানে সকল বয়সের মানুষকে নৈতিক মূল্যবোধ ও দীনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এ উন্নয়নের ধারাকে নষ্ট করার জন্য পায়তারা করছে। আমাদের এগার দফা দাবী সমূহ হলোঃ
২০১৬ সালের ১৪ই মার্চে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাটের পোরকরা গ্রামে মিথ্যা গুজব রটিয়ে হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রকাশ্য দিবালোকে দুইজনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যারা জড়িত ছিল ও পরোক্ষভাবে যারা ইন্ধন যুগিয়েছিল তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা হলে সেটাকে বিচারহীনতারই নামান্তর মনে করা হয়।কাজেই বিচারের নামে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয় সে ব্যাপারে আমরা সরকারের পদক্ষেপ আশা করি। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, গ্রেফতারও করা হয়নি, কিন্তু এখন তাদের নাম, ঠিকানা ও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য বেরিয়ে আসছে। এই হামলাকারীদেরকেও দ্রুত গ্রেফতার করে সম্পূরক অভিযোগপত্রের মাধ্যমে বা যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। উগ্রবাদী সন্ত্রাসী ও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী আবারও মিথ্যা হ্যান্ডবিল রচনা করেবিভিন্ন মসজিদে, মাদ্রাসায়, রাস্তাঘাটে, দোকানেবিতরণ করছে এবং যেটা আমরা বলিনি, করিনি, যেটা আমাদের আকিদা নয়, বিশ্বাস নয়, সেগুলোকে আমাদের উপর আরোপ করছে। তারা চাচ্ছে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে। মিথ্যা হ্যান্ডবিল রটিয়ে এহেন অপপ্রচারের সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ধর্মব্যবসায়ী ও উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া মাননীয় এমামের বসতবাড়িকে কেন্দ্র করে আমরা পুনরায় যেই উন্নয়ন প্রকল্প গড়ে তুলেছি, সেই উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে থাকা স্থাপনাগুলো যেমন-স্কুল, মসজিদ, মক্তব, গবাদি পশুর খামার, বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা, কুটির শিল্প ইত্যাদিপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।এ লক্ষ্যে চাষীরহাট বাজারে একটি পুলিশ ফাঁড়িস্থাপন করতে হবে। মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে হাইজ্যাক করে অতীতে কীভাবে জাতিবিনাশী ঘটনা ঘটানো হয়েছে, গুজব ছড়িয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে নির্দোষ মানুষের জান মালের ক্ষতি করা হয়েছে ও হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে তা গণমাধ্যমকর্মীদের অজানা নয়। এই গুজব সৃষ্টিকারী ও অপপ্রচারকারী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে আরও সোচ্চার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। সারা দেশ থেকে আমাদের হাতে আসা তথ্যমতে,শুধু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেই দেশের অন্তত শতাধিক জায়গায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলে বা জুমার খুতবায় বা অনলাইনেমিথ্যা ওয়াজ করা হয়েছে এবং আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ধ্বংস করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রচার করা হচ্ছে। কাজেই দেশজুড়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের আবাসস্থল, কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন প্রকল্প ইত্যাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। যেসমস্ত তাত্ত্বিক গুরু বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবী ব্যবহার করে ওয়াজের নামে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, গুজব রটাচ্ছে ও হামলার উসকানি দিচ্ছে, তাদেরকে শনাক্ত করেআইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের আপলোড করা বক্তব্যগুলো দেখে তাদের অন্ধ অনুসারীরা প্রভাবিত হয়ে বহু বেআইনী ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। যেমন জঙ্গিবাদী হামলা, ভাস্কর্য ভাঙচুর ইত্যাদিঘটনার কথা স্মরণ করা যেতে পারে। দেশের আইনমান্যকারী নাগরিক হিসাবে আমাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তথাপি ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বারবার আমাদের উপর হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করছি যে, পুনরায় আমাদের বাড়িঘরে, মসজিদে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে হামলা চালানোর হুমকি প্রকাশ্যে প্রদান করা হচ্ছে। যদি আবারও তারা আক্রমণ করে, তাহলে প্রশাসনিক নিরাপত্তার পাশাপাশিকার্যবিধিতে উল্লেখিত আত্মরক্ষার ধারা মোতাবেক আত্মরক্ষা করার অধিকার আমাদেররয়েছে। আমাদের সেই আত্মরক্ষার অধিকার সুস্পষ্টভাব